নারায়ণগঞ্জ ভোট বর্জণ, সংঘর্ষ এবং ভোট কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণার মধ্যদিয়ে নারায়ণগঞ্জ-১ ও ২ আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে তৃনমূলের প্রার্থী এড.তৈমুর আলম খন্দকার ভোটের শেষ সময় পর্যন্ত মাঠেই ছিলেন। সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রার্থী আলমগীর সিকদার লোটন সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জন ক‌রে‌ছেন। কেন্দ্র থে‌কে তাঁর পো‌লি এজেন্ট বের ক‌রে‌ দেওয়া ও নৌকা প্রতী‌কে সিল মারার অ‌ভি‌যোগ এনে রোববার বেলা ১১টার দি‌কে ভোট বর্জণের ঘোষণা দেন। এর আ‌গে, সকাল ১০টার দি‌কে নৌকা প্রতীকে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর সমর্থকদের সঙ্গে লাঙ্গল প্রতীকের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে দুই জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় ৫৬নং রামচন্দ্রদী সরকা‌রি প্রাথ‌মিক বিদ্যালয়ের নারী ও পুরুষ কেন্দ্রদুটির ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হয়। সংঘ‌র্ষের ঘটনায় আলমগীর সিকাদারের নির্বাচনী সমন্বয়ক ও তার ছোটভাই জাহাঙ্গীর সিকদার জোটনসহ ১০ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলমগীর সিকদার লোটন জানান, সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হচ্ছিল। এর মধ্যে সকাল ১০টার দিকে রামচন্দ্রদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গেলে দেখা যায় একটি কক্ষে নৌকা ও ইগল প্রতীকের দুই এজেন্ট জাল ভোট দিচ্ছে। এ নিয়ে তারা প্রতিবাদ করলে নৌকার লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় গ্রামবাসীও সংঘর্ষে জড়িয়ে পরলে পুলিশ গুলি করে। এতে তার দুই সমর্থকের গায়ে ছররা গুলি লাগে। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নজরুল ইসলামের নির্বাচন সমন্বয় সুন্দর আলী। সুন্দর আলী বলেন, ‘পরাজয় নিশ্চিত জেনে লাঙ্গলের প্রার্থী মিথ্যা অভিযোগ করছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক জানান, ‘ জাল ভোট দেয়ার অভিযোগ তুলে আলমগীর সিকদার ও তার ভাই জাহাঙ্গীর সিকদারের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা কেন্দ্র ও ব্যালটবাক্স ভাঙচুর করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি ছুড়ে। ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ রয়েছে। এই ঘটনায় জাহাঙ্গীর সিকদারসহ ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। নজরুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে হুমকি ধামকির অভিযোগ এনে নির্বাচনের আগের দিন শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন আবু হানিফ। অপর দিকে, নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনে আসনের উত্তর খৈশাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেটলি মার্কায় ভোট দেওয়ায় স্থানীয় এক যুবককে মারধর করে নৌকার সমর্থকরা। এ ঘটনায় নৌকা ও কেটলি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। জানা যায়, রূপগঞ্জ আসনের সংসদীয় নির্বাচনের প্রার্থী শাহজাহান ভূইয়াকে ভোট দেওয়ায় বেলা ১১টায় মইজ উদ্দিন সরকারের ছেলে আক্তার হোসেনকে (৩০) মারধর করে আহত করে গাজী গোলাম দস্তগীরের সমর্থকরা। উত্তর খৈশাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের ৫০ ফিটের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এ আসানে প্রার্থী হয়েছেন তৃনমূল বিএনপির মহাসচিব এড.তৈমুর আলম খন্দকার। নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই দাবি করে তিনি জানান, আমার লোকজনের ওপর হামলা করা হচ্ছে। কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে নির্বাচন করতে হচ্ছে। তৈমূর আলম বলেন, চনপাড়া কেন্দ্রে আমার এজেন্ট ঢুকতে দিচ্ছে না। এরিয়া নির্বাচন কমিশনকে আগেই বলা হয়েছে। তারা কোনো ভূমিকা নেয়নি। আইন-শৃংখলা বাহিনীকে বলা হয়েছে। নৌকা প্রার্থী টাকা বিতরণ করছে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, নৌকার প্রার্থী সমস্ত বিশৃঙ্খলা করছে। তবে আমি নির্বাচন চালিয়ে যাবো। আমাদের প্রত্যেক প্রার্থী নির্বাচন করবে। আমরা দেখতে চাই প্রধানমন্ত্রী তার অঙ্গীকার কতটুকু রক্ষা করতে পারেন। নির্বাচন কমিশন কতটুকু অঙ্গীকার রক্ষা করে। আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী, পাট বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী দুপুরে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে। জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। ভোটার উপস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।